লেখক পরিচিত

Dr Md Azizul Hoque (Abdullah)

ডাঃ মোঃ আজিজুল হক (আব্দুল্লাহ) ১৯৫৮ সালে রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহীর তৎকালীন একমাত্র Kindergarten English Medium School – Preparatory School থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন।। মাধ্যমিক স্তরে তিনি রাজশাহী সরকারী ল্যাবরেটরী হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। ১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় তিনি সম্মিলিত মেধা তালিকায় রাজশাহী বোর্ডে বিশিষ্ট স্থান লাভ করেন। অনুরূপভাবে রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৭৬ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও একই বোর্ড থেকে সম্মিলিত মেধা তালিকায় বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেন।

পিতৃবিয়োগের পর পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে তিনি নিজ জেলার বাইরে বা দেশের বাইরে গিয়ে পড়াশুনা করতে পারেন নি এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ১৯৭৮ সনে ভর্তি হন। তিনি ১৯৮৩ সালে এমবিবিএস পাশ করে সরকারী চাকুরিতে যোগদান করেন। তিনি বিভিন্ন ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্বাস্থ্যপ্রকল্প ও হাসপাতালে চাকুরী করেছেন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন সময়ে ইনডোর মেডিকেল অফিসার, রেজিষ্ট্রার, আরপি (মেডিসিন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রেজিষ্ট্রার থাকাকালীন সময়ে তিনি ১৯৯৮ সালে তদানীন্তন IPGMR (বর্তমান BSMMU) থেকে এমডি (ইন্টারনাল মেডিসিন) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী লাভ করেন।

তিনি ২০০০ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন এবং ২০০৫ সালে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। এই পদে থাকা অবস্থায় তিনি ২০১৭ সালে অবসরে যান। অবসর গ্রহণের তিন বৎসর পূর্ব পর্যন্ত তিনি মেডিসিন বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

তিনি অত্যন্ত শিক্ষানুরাগী একজন দক্ষ চিকিৎসক ও গবেষক। তার অধীনে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী এমবিবিএস ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী লাভ করেছে। দেশে-বিদেশে জার্নালে তার বহুসংখ্যক বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ লেখা প্রকাশিত হয়েছে।

ছাত্রদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে ও পাঠদান করতে গিয়ে তার মনে হয়েছে যে, আধুনিককালের অধিকাংশ ছাত্র ইংরেজিতে যতই জিপিএ-৫ অর্জন করুক না কেন ইংরেজি ভাষার দক্ষতায় তাদের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। কাজেই অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষে এই ভাষা পড়া, বুঝা ও লেখা অত্যন্ত কঠিন। অনেকসময় অনেক রোগ সম্পর্কে বুঝতে না পেরে ছাত্র-ছাত্রীরা ঐ সম্পর্কে বর্ণিত পাঠের উল্টো বা ভুল বুঝে থাকে। এইভাবে বিদেশী ভাষায় মেডিসিন চর্চা করতে গিয়ে রোগ-বালাই, তার লক্ষণাদি ও চিকিৎসা সম্পর্কে সম্যক ধারণার অভাবে ঐ ছাত্র ভবিষ্যতে ভাল ডাক্তার হতে পারে না। কাজেই ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি যদি বাংলা মিডিয়ামের কোন সহায়ক পুস্তক থাকে তবে পাঠ্য বুঝতে ছাত্র-ছাত্রীদের খুব সুবিধা হবে। এই আশা নিয়ে তিনি এই বইটি লেখার কাজ শুরু করেন। রোগ নির্ণয় পদ্ধতি বইটি তার নিজ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা। এতে সরকারী ও বেসরকারী সকল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অনেক উপকার হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

তিনি আরও বিশ্বাস করেন যে, জাপান, জার্মান, রাশিয়া, চীন প্রভৃতি দেশে যেরূপ মাতৃভাষার মাধ্যমে মেডিকেল সাইন্স চর্চা হয় তদ্রুপ অন্তত এই এমবিবিএস কোর্স পর্যন্ত বাংলা মিডিয়ামে পড়াশুনা হলে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে। তারা পূর্ণ ধারণাসহ, ভাল জ্ঞানসহ ভাল ডাক্তার হতে পারবে। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজগুলোতে বিজ্ঞান বিষয়ে (যেমন জীববিদ্যা, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে) অনার্স বাংলা মিডিয়ামে চালু হয়েছে।

অনেকেই মনে করেন বাংলা ভাষায় হলে সহজেই বই পড়ে মানুষ ডাক্তার বনে যেতে পারে। ব্যপারটা এত সহজ নয়। বিজ্ঞান চর্চা একটা সাধনার ব্যাপার বিশেষতঃ চিকিৎসাবিজ্ঞান। এই বই পড়ে কেউ হাতুড়ে ডাক্তার হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে একথা মনে রাখা দরকার যে সে হাতুড়ে ডাক্তারই থাকবে। কখনও ডিগ্রীপ্রাপ্ত ডাক্তারের মত দক্ষ হতে পারবে না। এই অজুহাতে ইংরেজী ভাষার বেড়াজালে শিক্ষার্থীদের ফেলা উচিত নয় বলে তিনি মনে করেন।

তার মত চিন্তাধারা নিয়ে সবাই এগিয়ে আসুক এটাই তাঁর কাম্য।

Scroll to Top